জার্মানির মাস্তানির পেছনে পাকিস্তান!

ফাইনালের আগে ১৭০ গোল। সাম্প্রতিক প্রতিটা বিশ্বকাপে চলছিল গোল-খরা। দক্ষিণ আফ্রিকার পরে ফুটবলপ্রেমীদের আশঙ্কা ছিল, বেশি গোল আর হয়তো কোনও বিশ্বকাপেই দেখা যাবে না!
কিন্তু ব্রাজিলে সেই আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হলো। পোস্টের প্রায় সব ‘অ্যাঙ্গল’ থেকে গোল আসলো পেলের দেশে। কারণ একটাই, ২০১৪ বিশ্বকাপ বলের আধুনিক প্রযুক্তি। যার নাম ‘ব্রাজুকা’।
যে ফুটবলের সৌজন্যে এখন ইতিহাসের মুখে দাঁড়িয়ে ব্রাজিল বিশ্বকাপ। ফাইনালে দু’গোল  হলে, গোল সংখ্যার বিচারে আগের সব বিশ্বকাপকে পিছনে ফেলে দিতো এ বারের টুর্নামেন্ট।
মজার কথা, ব্রাজুকা বানানোর পেছনে রয়েছে ভারতের প্রতিবেশি দেশ; ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৬৪ নম্বর পাকিস্তান। যে বল নিয়ে ম্যাজিক দেখিয়েছেন মেসি-নেইমার-মুলাররা। সেই ব্রাজুকা তৈরি পাকিস্তানের শিয়ালকোট শহরের কারখানায়।
মূলত মহিলা শ্রমিকদের হাতে তৈরি এই ব্রাজুকা। সঙ্গে আছে কতিপয় শিশু শ্রমিকেরও পরিশ্রম। ব্রাজুকার ভেতরের বিউটাইল ব্লাডার দিয়ে আরও বেশি বাতাস ঢুকতে পারে। আশপাশে থাকে নাইলন। ফলে আরও হালকা এটি।
ব্রাজুকা প্রস্তুতকারী সংস্থার নির্বাহী প্রধান খোয়াজা মাসুদ আখতার জানিয়েছেন, “চীনের সঙ্গে এক রকম লড়াই করেই বিশ্বকাপের বল বানানোর চুক্তি ছিনিয়ে নিয়েছি আমরা। জানতাম খুব কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ওপর অনেক পড়াশুনো আছে আমাদের সংস্থার।” তিনি বলেন, ব্রাজুকা বানাতে অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
ব্রাজুকা পরীক্ষায় নেমেছিল মহাকাশ বিজ্ঞানী কেন্দ্র নাসা। এই বল কতটা উঁচুতে উঠতে পারে, কতটা ফ্লাইট থাকে, কতটা গতিতে পরাস্ত করতে পারে গোলকিপারদের- তা খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে দেখেছে বিজ্ঞানীরা।  নাসার এক বিজ্ঞানী ভাষায়, “আমরা পরীক্ষা করেছি, কতটা স্পিন করতে পারে ব্রাজুকা।”
মজার ব্যাপার, ব্রাজিলে এত বেশি গোল হলেও নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, গোলকিপারদের সুবিধার জন্যই এই বল বানানো হয়েছে। হাওয়ায় খুব বেশি বাঁক খায় না এই বল।” বিশ্বকাপের আগে দু’বছর ধরে নানা দেশের দুশোর বেশি ফুটবলার পরীক্ষা করেছিলেন ব্রাজুকা। যে বল শেষমেশ সফল হয়েছে ফুটবলভক্তদের মনোরঞ্জন দিতে। সফল ভুমিকা পালন করেছে জার্মানির মাস্তানিতে।

0 comments :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন