সংসার সুখের হয় দুজনের গুণে!

জীবনের রং বদলায়। সময়ে- অসময়ে, কারণে-অকারণে বদলায়। জীবনের সব দিন কখনও এক যায় না। ভালো- মন্দ নিয়েই চলে যায় মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষণ।
তাইতো সম্পর্কে জড়ানোর পর মানুষের জীবনে আসে বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত। বিভিন্ন প্রতিকূলতার ভিতর দিয়েই এগিয়ে যেতে হয় তাদের। তারপরও মানুষ কিন্তু বসে থাকে না। আশায় বুক বাঁধে। ছোট একটা সংসারের স্বপ্ন সযত্নে মনের মাঝে লালন করে।
একটা নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে দেখা যায়, দাম্পত্য জীবনের প্রায় প্রতিদিনই ভালোবাসার মানুষটির সাথে ঝগড়া লেগে যায়। খুব ছোট ছোট বিষয়েও মনোমালিন্য হয়ে তখন। এতে করে একটু একটু করে মন উঠে যায় সম্পর্কের উপর থেকে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেরই সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় তার প্রিয় মানুষটির সাথে।
শুধু একজন ভালো হলেই কিন্তু সম্পর্ক ঠিক থাকে না। এজন্য দুজনের আন্তরিক হতে হয়। তাই এবার সম্পর্ক ঠিক রাখার কিছু কৌশল জানিয়ে দিচ্ছে অর্থসূচক।
এক. সময় নিয়ে ঝগড়া:
ঝগড়ার ক্ষেত্রে সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ‘তুমি আমাকে ঠিক মত সময় দাও না’ এই অভিযোগ কম বেশি সব প্রেমিক প্রেমিকা কিংবা স্বামী স্ত্রীরাই করে থাকেন। সেক্ষেত্রে দুজনে মিলে একটু সমঝোতা করলে কিংবা একে অপরকে একটু ছাড় দিলেই কিন্তু আর কোনো সমস্যা থাকে না।
দুই. ঘরোয়া বিষয় নিয়ে ঝগড়া:
বাজার করা, রান্না খারাপ হওয়া কিংবা এটা ওটা নানান ঘরোয়া বিষয় নিয়েও দাম্পত্য জীবনে কলহ বাঁধে। এক্ষেত্রে ঝগড়া মেটাতে দুজনেই কাজ ভাগ করে নিন। তাহলে একজনের উপর কাজের চাপ কমবে। এতে ঝগড়াও কমে যাবে।
তিন. অভাবে পড়লে ঝগড়া:
কথায় আছে না, অভাব যখন ঘরের দুয়ারে এসে দাঁড়ায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়। এ পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন ঝগড়া লাগে। তাই সম্পর্ক ঠিক রাখতে চাইলে দুজনেই কিছু করার চেষ্টা করুন তাতে দিন ভালোভাবে চলে যাবে। আর একজন কিছুই করতে না পারলে সঙ্গীকে কাজে সাহায্য করতে পারেন। এতে তার কষ্ট অনেকটাই হালকা হবে।
চার. শ্বশুরবাড়ি নিয়ে ঝগড়া:
শ্বশুরবাড়ি নিয়ে প্রায় সব যুগলরাই ঝগড়া করে থাকে। দুজনের পরিবার দুই রকম বলে অনেক কিছুতেই অমিল থাকে। আর সে সব ব্যাপারগুলোতে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হয় বলে স্বামী/স্ত্রীর মধ্যেই প্রায়ই গন্ডগোল লেগে যায়। এই সমস্যা দূর করতে দুজনেরই সহনশীল হওয়া উচিত।
পাঁচ. কোনো কারণ ছাড়াই ঝগড়া:
অনেক সময় কোনো কারণ ছাড়াই অথবা খুব তুচ্ছ কারণেই দুজনের মধ্যে বাক বিতন্ডা লেগে যায়। এসব ছোট খাটো ঝগড়া সম্পর্কের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি করে। তাই কারণ ছাড়া ঝগড়া এড়িয়ে চলাই ভালো।
ছয়. অতীত বিষয় নিয়ে ঝগড়া:
প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে অতীত বলে কিছু থাকতেই পারে। অনেক সময় দাম্পত্য জীবনে অতীত তুলে ঝগড়া করে স্বামী/স্ত্রী। এতে করে দুজনেরই কষ্ট বাড়ে। সম্পর্কটাও নষ্ট হয়ে যায়। তাই অতীতটাকে একেবারে ঝেড়ে ফেলাই ভালো। তাতে সংসারে শান্তি আসবে।
সাত. বদ অভ্যাস নিয়ে ঝগড়া:
জুতা পরে রুমে ঢোকা, বাথরুম ভিজিয়ে ফেলা কিংবা নাক ডেকে ঘুমানো ইত্যাদি অনেক ধরনের বদ অভ্যাস নিয়েই যুগলের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। তাই যতটা সম্ভব দুজনেই এ বদ অভ্যাসগুলো দূর করার চেষ্টা করুন। তাহলে সংসার সুখের হবে।
প্রবাদ আছে, দশের লাঠি একের বোঝা। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সব কাজ ভালোভাবে করা সম্ভব। দুজন যদি দুজনের প্রতি একটু আন্তরিক হয় তাহলেই সংসার থেকে অশান্তি, ঝগড়াঝাটি চিরতরে বিদায় নিবে। আর সুখের সংসার গড়তে দুজনের এ গুণই অপরিহার্য।

0 comments :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন